টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলায় তিন দশক ধরে চার ইউনিয়ন পরিষদের জরাজীর্ন ও ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় দাড়িয়ে আছে। ভবনে ভুঁতরে পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ ও জরাজীর্ন ভাঙ্গাচোরা ভবনের ছাঁদ নিয়ে নিয়ে বৃষ্টির পানি পরে মুল্যবান কাগজপত্র ও আসবাবপত্র নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ঝুঁকি মাথায় নিয়ে নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে দাপ্তরিক কাজকর্ম করছেন সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের সচিব ও চেয়ারম্যান-মেম্বারগন। ঝুঁকিপূর্ণ
ভবন ভেঙ্গে পরে যে কোন সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশংকা করেছেন। সোমবার (২৯ এপ্রিল) ইউনিয়ন পরিষদগুলোতে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে ভবনগুলো খুবই জরাজীর্ন ও ঝুঁকিপূর্ণ।উপজেলা নির্বাহী নির্বাহী অফিসারের কার্যালয় সুত্র জানায়, মির্জাপুর উপজেলার ঝুঁকিপূর্ণ ও জরাজীর্না ইউনিয়ন পরিষদগুলো হচ্ছে ২ নং জামুর্কি ইউনিয়ন পরিষদ, ৬ নং আনাইতারা ইউনিয়ন পরিষদ, ৯ নং বহুরিয়া ইউনিয়ন পরিষদ এবং ভাওড়া ইউনিয়ন পরিষদ। ২ নং জামুর্কি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ডি এ মতিন বলেন, ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক সংলগ্ন পাকুল্যা বাস স্টেশনের পুর্ব পাশে অবস্থিত ইউনিয়ন পরিষদের টিনসেট ভবনটি অত্যন্ত জরাজীর্ন । নানা জটিলতা এবং অর্থ সংকটের কারনে এই ইউনিয়ন পরিষদের টিনসেট ভবনটি সংস্কার এবং বহুতল ভবন করার জন্য কোন বরাদ্ধ আজ পর্যন্ত দেওয়া হয়নি। একটু বৃষ্টি হলেই পানি পরে মুল্যবান কাগজপত্র ও আসবাবপত্র নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। টিনসেট ভবনের সামনে একটি পুকুর রয়েছে। পুকুরের ভাঙ্গনের ফলে টিনসেট ইউনিয়ন পরিষদ ভবনটিও বিলিন হওয়ার পথে।
৬ নং আনাইতারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আবু হেনা মোস্তফা কামাল ময়নাল হক বলেন, তার ইউনিয়ন পরিষদের টিনসেট ভবনের আরও করুন অবস্থা। যে কোন সময় টিনসেট ভবনটি ভেঙ্গে পরে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। একটি নতুন ভবন নির্মানের জন্য তিনি উপজেলা প্রশাসন, উপজেলা পরিষদ, জেলা প্রশাসকসহ বিভিন্ন মন্ত্রনালয়ে বহু আবেদন নিবেদন করে আসছেন। কিন্ত আজ পর্যন্ত নতুন বরাদ্ধ হয়নি এমনকি জরাজীর্ন টিনসেট ভবনটিও সংষ্কার করা হয়নি।
৯ নং বহুরিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. আবু সাইদ মিয়া ছাদু বলে প্রায় তিন দশক ধরে তার ইউনিয়নের ভবনটি খুবই জরাজীর্ন ও অত্যান্ত ঝুঁকিপূর্ণ। দাপ্তরিক কাজ করতে হয় বিভিন্ন বাসাবাড়িতে বা দোকানে। ভাওড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. মাসুদুর রহমান মাসুদ অভিযোগ করেন, জরাজীর্ন ও ঝুঁকিপূর্ণ
ইউনিয়ন পরিষদের ভবন ধ্বসে পরে মারাত্বক দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। জীবনের উপর ঝুঁকি নিয়ে তারা দাপ্তরিক কাজকর্ম চালিয়ে যাচ্ছেন। ভবন এবং টিনসেট ভবনগুলো দ্রুত সংষ্কার ও নতুন ভবন বরাদ্ধের জন্য স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয়সহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট জোর দাবী জানিয়েছেন এই চার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানগন।
এ ব্যাপারে উপজেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মীর্জা শামীমা আক্তার শিফা বলেন, মির্জাপুর উপজেলার চারটি ইউনিয়ন পরিষদের ভবনগুলো খুবই জরাজীর্ন ও ঝুঁকিপূর্ণ।
বিষয়টি সাবেক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর এনায়েত হোসেন মন্টু উপজেলা পরিষদের মাসিক সমন্ময় সভায় রেজুলেশনের মাধ্যমে জেলা প্রশাসক, স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয়সহ বিভিন্ন দপ্তরকে জানিয়েছেন। তারপও বরাদ্ধ না আসায় নতুন ভবন নির্মান হচ্ছে না। জরাজীর্না ও ঝুঁকিপূর্ণ চারটি ইউনিয়ন পরিষদের জন্য নতুন ভবন নির্মানের জন্য মাননীয় জাতীয় সংসদ সদস্য খান আহমেদ শুভ এমপি, জেলা প্রশাসক, স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয়ের মন্ত্রী ও সবিচসহ সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের নিকট জোর দাবী জানিয়েছেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার শেখ নরুুল আলম বলেন, আমি অল্প কিছু দিন হলো এই উপজেলায় যোগদান করেছি। উপজেলার চরটি ইউনিয়ন পরিষদের ভবন জরাজীর্ন ও ঝুঁকিপুর্ন বলে চেয়ারম্যান-মেম্বারগন ইতিমধ্যে জানিয়েছেন। এর আগে জেলা প্রশাসক মহোদয় জরাজীর্ন ভবনগুলো পরিদর্শন করেছেন বলে জানতে পেরেছেন। উপজেলার জরাজীর্ন ও ঝুঁকিপূর্ণ চারটি ইউনিয়ন পরিষদের জন্য নতুন ভবন নির্মানের জন্য মাননীয় এমপি, জেলা প্রশাসকসহ স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয়কে অবহিত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তথ্য সূত্র: মীর আনোয়ার হোসেন টুটুল, ইত্তেফাক।