টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে শত বছরের পারিবারিক রাস্তা বন্ধ করে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে আরিফুর রহমান সোহেল মোল্লা নামে এক ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে। ঈদুল ফিতরের দিন সকালে রাস্তাটি বন্ধ করে দেয়ায় অবরুদ্ধ হয়ে রয়েছে তার চাচা বরকত মোল্লার পরিবার। রাস্তা বন্ধ করে দেয়ায় অবরুদ্ধ পরিবারের সদস্যরা ঈদুল ফিতরের নামাজে যেতে পারেননি। এতে ওই পরিবারটি মানবেতর জীবন যাপন করছে বলে অভিযোগে জানা গেছে। এই অমানবিক ঘটনাটি ঘটেছে মির্জাপুর উপজেলার বানাইল ইউনিয়নের বাদে হালালিয়া গ্রামে। এ নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। অবরুদ্ধ পরিবারে পক্ষ থেকে মির্জাপুর থানায় লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে।
জানা যায়, মির্জাপুর উপজেলার বানাইল ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ড মেম্বার বাদে হালালিয়া গ্রামের আরিফুর রহমান সোহেল মোল্লার সাথে তার চাচা বরকত মোল্লার দীর্ঘদিন ধরে জমি সংক্রান্ত বিরোধ চলছে। এ নিয়ে এলাকায় কয়েক দফা সালিসি বৈঠক হলেও এর কোনো মীমাংসা হয়নি। ঈদুল ফিতরের দিন সকালে দুই পরিবারের মধ্যে তর্কবির্তক হলে ইউপি সদস্য সোহেল মল্লিক চাচা ও শ্বশুর বাড়ির লোকজন নিয়ে গাছের গুড়ি পুতে বাঁশ ও গাছের ডাল দিয়ে বরকত মোল্লার পরিবারের সদস্যদের যাতায়াতের একমাত্র রাস্তা বন্ধ করে দেয়। এছাড়া সেখানে মাটি কেটে রাস্তার মাঝে গর্তের সৃষ্টি করে। রাস্তা না থাকায় অবরুদ্ধ হওয়া পরিবারের সদস্যরা ঈদুল ফিতরের নামাজ পড়তে যেতে পারেনি। এতে ওই পরিবারটি মানবেতর জীবন যাপন করছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
বরকত মোল্লার ছেলে ইয়াকুব মোল্লা এ বিষয়ে গত শুক্রবার (১২ এপ্রিল) মির্জাপুর থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন। এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে শনিবার (১৩ এপ্রিল) সরজমিন বাদে হালালিয়া গ্রামে গেলে বেড়া দিয়ে রাস্তা বন্ধ করার দৃশ্য চোখে পড়ে।
এলাকার বৃদ্ধ কলিম উদ্দিন মোল্লা, দেলোয়ার মোল্লা ও শফিুকুল মোল্লা বলেন, শত বছরের পুরনো পারিবারিক রাস্তাটি ইউপি সদস্য বন্ধ করে দেয়ায় বরকত মোল্লার পরিবারটি অবরুদ্ধ হয়ে আছে। গ্রামের লোকজন শত চেষ্টা করেও রাস্তাটি খুলে দেয়ার ব্যবস্থা করতে পারিনি।
বরকত মোল্লার স্ত্রী শিউলি বেগম বলেন, ঈদের দিন মেয়ের জামাইসহ ছেলের শ্বশুরবাড়ির লোকজন বাড়িতে বেড়াতে আসে। ঈদের দিন সকালে একজন জনপ্রতিনিধি আমার বাড়ির রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছে। আমরা বাড়ি থেকে বেড় হতে পারছি না।
এই বিষয়ে কথা বলতে ইউপি সদস্য সোহেল মোল্লার বাড়িতে গেলে তিনি বলেন, আমাদের সঙ্গে তাদের জমি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে ঝামেলা আছে। এ নিয়ে তারা আমাদের সঙ্গে প্রায় সময়েই অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও ঝগড়া করে মারতে আসে। এজন্য আমার জমিতে বেড়া দিয়েছি তাদের জায়গায় তো দেইনি।
বানাইল ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল মামুন সিদ্দিকী বলেন, বিষয়টি জানা নেই। তবে খোঁজ নিয়ে এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সঙ্গে আলোচনা করে বিষয়টি মীমাংসার চেষ্টা করবো।
মির্জাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল করিমের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, সরেজমিনে তদন্ত কর্মকর্তা পাঠানো হয়েছে।
এ বিষয়ে মির্জাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ নুরুল আলমের সঙ্গে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বলেন, বিষয়টি জানা ছিলো না। তবে জরুরী ভিত্তিতে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি জানান।