Dhaka 1:07 pm, Friday, 20 December 2024
News Title :
টাঙ্গাইলের মির্জাপুর বাইপাসে সড়ক দুর্ঘটনায় এক নারী নিহত, আহত চার টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে কমলা চাষে সাফল্য পেলেন দেলোয়ার মির্জাপুরে তিনদিন ব্যাপী ইসলামী যুব কল্যাণের তাফসিরুল কোরআন মাহফিল শুরু বৃহস্পতিবার টাঙ্গাইলে দেশে প্রাকৃতিক বন উজার করে আর কোন সামাজিক বনায়ন হবে না- উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান মির্জাপুরেনিরপেক্ষ, জবাবদিহিমূলক, জনমুখী, দক্ষ পুলিশ বাহিনী গড়ে তোলাই আমাদের লক্ষ্য-কমান্ড্যান্ট ডিআইজি আশফাকুল আলম মির্জাপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের সঙ্গে প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির নেতৃবৃন্দের সৌজন্য সাক্ষাৎ মির্জাপুরে যুবদলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প মির্জাপুরের গোড়াইতে স্বপ্নের ৫১৩ তম নতুন আউটলেট উদ্বোধন মির্জাপুরের গোড়াইতে স্বপ্নের ৫১৩ তম নতুন আউটলেট উদ্বোধন মির্জাপুরে “মহেড়া পিঠা ঘর এন্ড পার্টি হাউজের শুভ উদ্বোধন

মির্জাপুরে প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে অনিয়ম-দুর্নীতি, ঘুষ দেওয়ার পরও ৬০ শিক্ষক বেতন পাচ্ছেন না সাত বছর!

  • Reporter Name
  • Update Time : 08:42:36 am, Wednesday, 3 April 2024
  • 47 Time View
টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস কতিপয় শিক্ষক নেতা ও অফিসের কতিপয় কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সিন্ডিকেটে অনিয়ম-দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত হয়েছে। চক্রটি নিয়োগ ও বদলি বাণিজ্যের সঙ্গেও দীর্ঘদিন জড়িত। এই চক্রের কবলে দীর্ঘদিন ধরে অনিয়ম-দুর্নীতির কারণে উপজেলার ১৭০ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহস্রাধিক শিক্ষক-কর্মচারী জিম্মি বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এই সিন্ডিকেট চক্রটি শিক্ষকদের জিম্মি করে ঘুষ নেওয়ার পরও বিভিন্ন বিদ্যালয়ের ৬০ জন সহকারী শিক্ষক ডিপিএডের বকেয়া বেতন পাচ্ছেন না সাত বছর। একজন শিক্ষকের বকেয়া বেতনের পরিমাণ প্রায় ৬০ হাজার টাকা। বকেয়া বেতন-ভাতার জন্য তারা দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন। আবার হঠাৎ বিভিন্ন বিদ্যালয়ের ২০০ শিক্ষকের গত দুই মাসের বেতন বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে চরম বিপাকে পড়েছেন এসব শিক্ষক।
শনিবার বিভিন্ন বিদ্যালয়ের ভুক্তভোগী শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলে শিক্ষা অফিসের অনিয়ম-দুর্নীতির এমন চিত্র পাওয়া গেছে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, মির্জাপুর উপজেলায় একটি পৌরসভা এবং ১৪ ইউনিয়নে ১৭০ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। আটটি ক্লাস্টারের মাধ্যমে এসব বিদ্যালয় পরিচালিত হয়ে আসছে। এসব বিদ্যালয়ে শিক্ষক-কর্মচারী রয়েছে সহস্রাধিক। ঘুষ ছাড়া উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে কোনো কাজ হয় না বলে অভিযোগ রয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ভুক্তভোগী অন্তত ১৫ জন সাবেক ও বর্তমান প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষক অভিযোগ করেন, বিভিন্ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রতি বছর কন্টিজেন্সির টাকা, বিদ্যালয়ে ক্ষুদ্র মেরামতের জন্য টাকা, স্লিপের টাকা, বিদ্যালয়ের রং-চুন কামের টাকা, বিভিন্ন জিনিসপত্র সামগ্রী ক্রয়ের টাকা, শিশু শ্রেণির জন্য সাজসজ্জা উপকরণ ক্রয়ের জন্য টাকা, খেলাধুলা সামগ্রীর জন্য টাকা, বই পরিবহনের জন্য টাকা, শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের জন্য ভাতার টাকা, বিভিন্ন জাতীয় অনুষ্ঠান পালনের জন্য টাকাসহ বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজের জন্য প্রতি বছর লাখ লাখ টাকা সরকারিভাবে বরাদ্দ আসে মির্জাপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে। অভিযোগ রয়েছে, শিক্ষা অফিসের ঐ সিন্ডিকেট বিপুল অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। ফলে বিভিন্ন বিদ্যালয়ে গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়নমূলককাজ তেমন হচ্ছে না।
এদিকে উচ্চতর গ্রেড পাওয়ার জন্য ২০১৫-২০১৬ শিক্ষাবর্ষ থেকে ২০১৯-২০২০ সালে ৬০ শিক্ষক টাঙ্গাইল পিটিআইতে দেড় বছর মেয়াদি প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। বকেয়া বেতন পাইয়ে দেওয়ার জন্য এই শিক্ষকদের কাছ থেকে ঘুষও নেওয়া হয়। তবে গত সাত বছরেও ৬০ শিক্ষক বকেয়া বেতন পাননি বলে অভিযোগ করেন। এছাড়া শিক্ষা অফিসের কারসাজির কারণে উপজেলার দেওহাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বহনতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কাণ্ঠালিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ঘুগি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পুষ্টকামুরী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পুষ্টকামুরী আলহাজ শফিউদ্দিন মিঞা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ইচাইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ বিভিন্ন বিদ্যালয়ের প্রায় ২০০ শিক্ষকের গত জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসের বেতন হঠাৎ বন্ধ হওয়ায় তারা চরম বিপাকে পড়েছেন বলে জানিয়েছেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. শরীফ উদ্দিন বিভিন্ন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, শিক্ষক-কর্মচারীরা অফিসে কাজের জন্য এসে যাতে কোনো হয়রানির শিকার না হন সে জন্য তিনি আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করে দেন। যাদের বেতন-ভাতা বকেয়া ও বন্ধ রয়েছে অচিরেই তারা পাবেন। কোনো শিক্ষক নেতা অফিসের কর্মকর্তাদের নাম ব্যবহার করে কোনো অনিয়ম দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত থাকলে অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সৌজন্যে: ইত্তেফাক।
Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

টাঙ্গাইলের মির্জাপুর বাইপাসে সড়ক দুর্ঘটনায় এক নারী নিহত, আহত চার

মির্জাপুরে প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে অনিয়ম-দুর্নীতি, ঘুষ দেওয়ার পরও ৬০ শিক্ষক বেতন পাচ্ছেন না সাত বছর!

Update Time : 08:42:36 am, Wednesday, 3 April 2024
টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস কতিপয় শিক্ষক নেতা ও অফিসের কতিপয় কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সিন্ডিকেটে অনিয়ম-দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত হয়েছে। চক্রটি নিয়োগ ও বদলি বাণিজ্যের সঙ্গেও দীর্ঘদিন জড়িত। এই চক্রের কবলে দীর্ঘদিন ধরে অনিয়ম-দুর্নীতির কারণে উপজেলার ১৭০ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহস্রাধিক শিক্ষক-কর্মচারী জিম্মি বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এই সিন্ডিকেট চক্রটি শিক্ষকদের জিম্মি করে ঘুষ নেওয়ার পরও বিভিন্ন বিদ্যালয়ের ৬০ জন সহকারী শিক্ষক ডিপিএডের বকেয়া বেতন পাচ্ছেন না সাত বছর। একজন শিক্ষকের বকেয়া বেতনের পরিমাণ প্রায় ৬০ হাজার টাকা। বকেয়া বেতন-ভাতার জন্য তারা দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন। আবার হঠাৎ বিভিন্ন বিদ্যালয়ের ২০০ শিক্ষকের গত দুই মাসের বেতন বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে চরম বিপাকে পড়েছেন এসব শিক্ষক।
শনিবার বিভিন্ন বিদ্যালয়ের ভুক্তভোগী শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলে শিক্ষা অফিসের অনিয়ম-দুর্নীতির এমন চিত্র পাওয়া গেছে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, মির্জাপুর উপজেলায় একটি পৌরসভা এবং ১৪ ইউনিয়নে ১৭০ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। আটটি ক্লাস্টারের মাধ্যমে এসব বিদ্যালয় পরিচালিত হয়ে আসছে। এসব বিদ্যালয়ে শিক্ষক-কর্মচারী রয়েছে সহস্রাধিক। ঘুষ ছাড়া উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে কোনো কাজ হয় না বলে অভিযোগ রয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ভুক্তভোগী অন্তত ১৫ জন সাবেক ও বর্তমান প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষক অভিযোগ করেন, বিভিন্ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রতি বছর কন্টিজেন্সির টাকা, বিদ্যালয়ে ক্ষুদ্র মেরামতের জন্য টাকা, স্লিপের টাকা, বিদ্যালয়ের রং-চুন কামের টাকা, বিভিন্ন জিনিসপত্র সামগ্রী ক্রয়ের টাকা, শিশু শ্রেণির জন্য সাজসজ্জা উপকরণ ক্রয়ের জন্য টাকা, খেলাধুলা সামগ্রীর জন্য টাকা, বই পরিবহনের জন্য টাকা, শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের জন্য ভাতার টাকা, বিভিন্ন জাতীয় অনুষ্ঠান পালনের জন্য টাকাসহ বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজের জন্য প্রতি বছর লাখ লাখ টাকা সরকারিভাবে বরাদ্দ আসে মির্জাপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে। অভিযোগ রয়েছে, শিক্ষা অফিসের ঐ সিন্ডিকেট বিপুল অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। ফলে বিভিন্ন বিদ্যালয়ে গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়নমূলককাজ তেমন হচ্ছে না।
এদিকে উচ্চতর গ্রেড পাওয়ার জন্য ২০১৫-২০১৬ শিক্ষাবর্ষ থেকে ২০১৯-২০২০ সালে ৬০ শিক্ষক টাঙ্গাইল পিটিআইতে দেড় বছর মেয়াদি প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। বকেয়া বেতন পাইয়ে দেওয়ার জন্য এই শিক্ষকদের কাছ থেকে ঘুষও নেওয়া হয়। তবে গত সাত বছরেও ৬০ শিক্ষক বকেয়া বেতন পাননি বলে অভিযোগ করেন। এছাড়া শিক্ষা অফিসের কারসাজির কারণে উপজেলার দেওহাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বহনতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কাণ্ঠালিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ঘুগি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পুষ্টকামুরী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পুষ্টকামুরী আলহাজ শফিউদ্দিন মিঞা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ইচাইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ বিভিন্ন বিদ্যালয়ের প্রায় ২০০ শিক্ষকের গত জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসের বেতন হঠাৎ বন্ধ হওয়ায় তারা চরম বিপাকে পড়েছেন বলে জানিয়েছেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. শরীফ উদ্দিন বিভিন্ন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, শিক্ষক-কর্মচারীরা অফিসে কাজের জন্য এসে যাতে কোনো হয়রানির শিকার না হন সে জন্য তিনি আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করে দেন। যাদের বেতন-ভাতা বকেয়া ও বন্ধ রয়েছে অচিরেই তারা পাবেন। কোনো শিক্ষক নেতা অফিসের কর্মকর্তাদের নাম ব্যবহার করে কোনো অনিয়ম দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত থাকলে অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সৌজন্যে: ইত্তেফাক।